কুমিল্লা নগরের ঝাউতলা এলাকার একটি অভিজাত হোটেলে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ক্যামেরার লেন্স চুরির ঘটনায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আনাস আহমেদ ও শামীম ভূঁইয়া।
গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন প্রক্টর অধ্যাপক মো. আবদুল হাকিম। তিনি বলেন, শিক্ষার্থী আনাসের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ ওঠায় এবং বিষয়টি আলোচনায় আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর চুরির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ফলে তাঁকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর শামীমের ব্যাপারে শৃঙ্খলা বোর্ড তাঁকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজ সোমবার সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২৫ এপ্রিল আনাস ও শামীম কুমিল্লার ঝাউতলায় এক বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সেখান থেকে ফটোগ্রাফার রাব্বি এলাহীর ক্যামেরার লেন্স চুরির ঘটনা ঘটে। পরে সিসিটিভি ফুটেজে দুজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে শনাক্ত করা হয়। রাব্বি কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর রাব্বি এলাহী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আনাসকে মারধর এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আপত্তিকর অবস্থায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করেন, যা মুঠোফোনে ধারণ করে রাখেন। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে দুই পক্ষকে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ থানা নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করে।
গত শনিবার পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় শামীমের বাসা থেকে চুরি যাওয়া লেন্স উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আনাস চুরির কথা স্বীকার করেন। পরে আনাসকে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। ঘটনার পর থেকে শামীম পলাতক। এ জন্য তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে চুরির সত্যতা মিলেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগও আছে। ধারণা করা হচ্ছে, মাদকের টাকার জন্য তাঁরা এ চুরির ঘটনায় জড়িয়েছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগকারী মামলা করতে রাজি না হওয়ায় আনাসকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।