নির্মাতা ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলাকে আজীবন সম্মাননা দিয়েছে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট (এএফআই)। গত শনিবার রাতে লস অ্যাঞ্জেলেসের ডলবি থিয়েটারে কপোলার হাতে ৫০তম এএফআই আজীবন সম্মাননা পুরস্কার তুলে দেন নির্মাতা জর্জ লুকাস ও স্টিভেন স্পিলবার্গ।
অনুষ্ঠানে কপোলাকে প্রশংসায় ভাসান স্পিলবার্গ। ‘দ্য গডফাদার’ নির্মাতাকে ‘সাহসী’ উল্লেখ করেন স্পিলবার্গ। ১৯৬৭ সালে দুই নির্মাতার প্রথম দেখা। কপোলাকে নির্মাতাদের প্রেরণা উল্লেখ করে স্পিলবার্গ এদিন বলেন, ‘স্বাধীন ঘরানার শিল্পীদের জন্য আপনি একজন যোদ্ধা। নিজের কাজে সব সময়ই সেরা। তবে কেবল নিজের কাজ নয়, নতুন নতুন আইডিয়া, দর্শন তুলে ধরে অন্যদের অনুপ্রাণিত করেন।’
অন্য নির্মাতাদের সঙ্গে কপোলার ‘অ্যাপোক্যালিপস নাউ’ দেখেছিলেন স্পিলবার্গ। সিনেমার প্রাথমিক কাটটির দৈর্ঘ্য ছিল পাঁচ ঘণ্টা। সেই স্মৃতি মনে করে স্পিলবার্গ বলেন, ‘যখন সিনেমাটির সম্পাদনা চলে, আপনি আমাদের সেটা দেখার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। দেখে খোলাখুলি নিজের মত জানাতে বলেছিলেন। তখন সিনেমাটি দেখতে দেখতে অনেক কিছু শিখেছিলাম, আপনার সুপারপাওয়ার সম্পর্কে ধারণা হয়েছিল।’
কপোলার দ্য গডফাদার সম্পর্কে স্পিলবার্গ বলেন, ‘আমার কাছে “দ্য গডফাদার” সর্বকালের সেরা আমেরিকান সিনেমা। আমরা যখন ছোট থাকি, তখন মা-বাবাকে গর্বিত করতে চাই, পরে বন্ধুদের, এখন সমবয়সীদের।
নির্মাতা ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলাকে আজীবন সম্মাননা দিয়েছে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট (এএফআই)। রয়টার্স
কিন্তু স্যার, আপনি সব সময়ের ঊর্ধ্বে; অতুলনীয়। আপনি আমেরিকান সিনেমাকে সমৃদ্ধ করেছেন, এখনো করে চলেছেন। আপনি কয়েক প্রজন্মের গল্প বলিয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন। আপনি আমাদের কাজ নিয়েও গর্বিত হয়েছেন।’
পুরস্কার গ্রহণ করে দেওয়া বক্তব্যে পরিবার ও বন্ধুদের স্মৃতিচারণা করেন কপোলা, তাঁকে অনুপ্রাণিত করার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে। বন্ধু, সহকর্মী, শিক্ষক, খেলার সঙ্গী, পরিবার থেকে প্রতিবেশী—সব সুন্দর মুখ আমাকে আবার স্বাগত জানাচ্ছে। আমি সব সময়ই তোমাদের একজন হয়েই আছি।’
এদিন কপোলাকে নিয়ে কথা বলেন অভিনেতা রবার্ট ডি নিরো, আল পাচিনো, হ্যারিসন ফোর্ড, মরগান ফ্রিম্যান, ডাস্টিন হফম্যান, রন হাওয়ার্ড, নির্মাতা স্পাইক লি, অ্যাডাম ড্রাইভারসহ অনেকেই। নির্মাতাকে এ সময় কয়েকবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়তে দেখা যায়। ‘দ্য গডফাদার’ অভিনেতা ডি নিরো ও পাচিনো মঞ্চে উঠে কপোলাকে সম্মান জানিয়ে বলেন, ‘আপনি আমাদের জীবন বদলে দিয়েছেন।’ পাচিনো বলেন, তাঁকে নিয়ে নিজের যতটা আত্মবিশ্বাস ছিল, কপোলার ছিল আরও বেশি।
আরও পড়ুন
‘নগ্ন-কন্যা’ থেকে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী নারী
১৯৭৩ সালে প্রথম দেওয়া হয় আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের আজীবন সম্মাননা পুরস্কার। এ পর্যন্ত এ পুরস্কার পেয়েছেন বেটি ডেভিস, আলফ্রেড হিচকক, জিন কেলি, স্টিভেন স্পিলবার্গ, মেরিল স্ট্রিপ, ডেনজেল ওয়াশিংটন, নিকোল কিডম্যানসহ অনেকেই।
তথ্যসূত্র: ভ্যারাইটি